Car Dorkar

চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিভাগ ভ্রমন প্রেমিদের কাছে

আপনি যদি পাহার, ঝর্ণা, হ্রদ, বন ও সমুদ্রের মিতালি একসঙ্গে উপভোগ করতে চান ঘুরে আসতে পারেন চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় জেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। চট্টগ্রাম শহর ও এর বিভিন্ন উপজেলায় চড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাজারো প্রাচীন এবং দর্শনীয় স্থান। রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন পাহাড়, সমুদ্র সৈকত, নদী আর ঝর্ণার সমারোহ সহ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, চলুন জেনে নেওয়া যাক এই জেলার বিশেষ কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত চট্টগ্রামের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলীর মোহনায় অবস্থিত এই সৈকতটি আধুনিকায়নের ফলে বর্তমানে কক্সবাজারের মতোই সৌন্দর্য বহন করেছে বলে জানান অনেক পর্যটকরা। সমুদ্রতীরে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রঙ বেরঙের ফুলের বাগান, বিশ্রাম চেয়ার এবং রঙ-বেরঙের পাথর দিয়ে নতুন রুপে সাজানো এই সৈকতটি পর্যটকদের মন কেড়ে নেয় সহজেই।

বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার

মুসলমানদের সুনামধন্য এই বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকার একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। বায়েজিদ বোস্তামী ছিলেন ইরানের বিখ্যাত পার্সিয়ান সুফি, যার নামে এই মাজারটি তৈরি করা হয়েছে। ১৮১৩ সালে আবিষ্কৃত দেয়ালঘেরা এই সমাধিস্থলটি বর্তমানে আধুনিক কাঠামো দ্বারা প্রতিস্থাপিত। এই মাজারের বিশেষ আকর্ষণ বোস্তামীর কাছিম ও গজার মাছ। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই কাছিম চরমভাবে বিপন্নপ্রায় একটি প্রজাতি। বোস্তামীর মাজার চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের পাশাপাশি দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্যেও একটি অত্যন্ত আকর্ষনীয় স্থান।

কাপ্তাই লেক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম লেক বাংলাদেশের রাঙামাটির কাপ্তাই লেক। ইংরেজি এইচ বর্ণের আকৃতি বিশিষ্ট এই লেকটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিলো ১৯৫৬ সালে এবং শেষ হয় ১৯৬২ সালে। মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে আমেরিকার অর্থায়নে কর্ণফুলী নদীর উপর কাপ্তাই বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। যার ফলে রাঙামাটি জেলার ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি ডুবে যায়। ৬৭০.৬ মিটার দীর্ঘ ও ৫৪.৭ মিটার উচ্চতার এ বাঁধটির উপর নির্মিত ঝুলন্ত ব্রীজটি পর্যটকদের আকর্ষনের মূল কেন্দ্রবিন্দু। দূর দূরান্ত মানুষ পাহাড়ে বেষ্টিত এই হৃদ এবং ব্রীজটি দেখতে বিড় জমায় কাপ্তাই লেকে।

মহামায়া লেক

কাপ্তাইয়ের পরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক হলো চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত মহামায়া লেক। ১৯৯৯ সালে মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করার মাধ্যমে এর উৎপত্তি হলেও কাজটি সম্পূর্ণ করা হয় ২০১০ সালে। এই অল্প সময়ে লেকটি তার রূপে ও মাধুর্যে পর্যটকদের মুগ্ধ করে ফেলেছে। দীর্ঘ ১১ বর্গ কিলোমিটারের এই হৃদটি অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড় এবং ঝরনার সমন্বয়ে সৃষ্ট। এই লেকে রয়েছে কায়াকিং ও ক্যাম্পিং এর সুযোগ। তাছাড়া মহামায়া গেলে পাহাড়, গুহা, ঝর্ণা ও জলধারার সংমিশ্রণে এক অপূর্ব সুন্দর অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়।

ফয়েজ লেক

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক ‘ফয়েজ লেক’। চট্টগ্রামের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে খুলশি এলাকায় ১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কতৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে খনন করা হয় এই কৃত্রিম হ্রদটি। লেকটির নকশাকার প্রকৌশলী মি. ফয়-এর নামানুসারে হ্রদটির নাম ‘ফয়’স লেক’ রাখা হয়। ৩৩৬ একর জমির উপর নির্মিত এই হৃদটি চট্টগ্রামের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় বাটালি হিলের পাশেই অবস্থিত। এই লেকে রয়েছে শিশু ও বড়দের জন্য বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থাও। শান্ত আর সতেজ পরিবেশে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এসে বিড় জমায় এই লেকে।

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরত্বে এই গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতটি অবস্থিত। এই সৈকতের বিশেষত্ব হলো এখানে আপনি সাগরের জলরাশি, কেওড়া বন এবং ম্যানগ্রোভ বনের মত সুন্দর পরিবেশ একসাখে উপভোগ করতে পারবেন। স্থানীয় মানুষের কাছে ‘মুরাদপুর বীচ’ নামে সুপরিচিত এই সৈকতটিকে ভিন্নতা দিয়েছে সাগরের পাশজুড়ে সবুজ ঘাসের বিস্তৃত প্রান্তর। এই ঘাসের মাঠে প্রাকৃতিক ভাবেই সৃষ্টি হয়েছে আঁকা বাঁকা নালা। জোয়ারের সময় যা পানি দিয়ে ভরে উঠে অন্যরকম সৌন্দর্যের অবতারণা করে। সৈকতটিতে সাগরের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এখানকার সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের বেশ মুগ্ধ করে৷

খৈয়াছড়া ঝর্ণা

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঝর্ণাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামের খৈয়াছড়া ঝর্ণাটি অন্যতম। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পার্শ্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে এই ঝর্ণাটির অবস্থান। ৯টি বড় ধাপ এবং অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ধাপ বিশিষ্ট এই বিশাল জলপ্রপাতটি প্রায় ৫০ বছর আগে থেকেই প্রবাহিত হচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। ২০১০ সালে সরকার বারৈয়াঢালা ব্লক থেকে কুণ্ডের হাট (বড়তাকিয়া) ব্লকের ২৯৩৩.৬১ হেক্টরর পাহাড়কে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করায় খৈয়াছড়া ঝর্ণা জাতীয় উদ্যানের আওতাভুক্ত হয়। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী এই ঝর্ণার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিড় জমায়।

 

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাতায়াত ব্যবস্থা 

চট্টগ্রাম ভ্রমনের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় যাতায়াত ব্যবস্খা বাস হতেও আপনি ট্রেন, বিমান নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন।  বাস যোগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে সময় লাগে ৫ ঘন্টা মতো,  ট্রেন যোগে এটা ৮ ঘন্টার উপরে যাবে, সবচেয়ে কম সময়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার উপায় হচ্ছে বিমান ৩০ থেকে ৪০ মিনিটে ঢাকা বিমান বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে পৌছে যাবেন। আর ব্যক্তি গত গাড়ি আথবা কার দরকার থেকে রেন্ট এ কার এর গাড়ি ভাড়া নিয়ে চট্টগ্রাম যেতে পাবেন কার দরকার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এর যাতায়াত এর জন্য বাস, মিনি বাস,হাইচ নোয়া, সহ সকল প্রকার প্রাইভেট কার ভাড়া দিয়ে থাকে। 

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *